ঢাকা , রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ , ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলবে মিটারে

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০২-০১-২০২৫ ১১:৫৯:০৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ০২-০১-২০২৫ ০১:৫৫:১৫ অপরাহ্ন
সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলবে মিটারে সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
সিএনজিচালিত অটোরিকশার মিটারে চলাচল নিশ্চিত করা হবে। এ জন্য দুয়েক মাস সময় চেয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন। বুধবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলে বিআরটিএর সেবা সহজীকরণ-সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

সভায় জানানো হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা নির্ধারিত। গত প্রায় ২০ বছরে নতুন কোনো অটোরিকশার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির কাছে অটোরিকশার মালিকানা চলে গেছে। মালিকরা চালকদের কাছ থেকে দৈনিক জমার অর্থ বেশি আদায় করছেন। আর চালকরা পকেট কাটছেন যাত্রীদের। এতে আরও বলা হয়, বাজারে একটি অটোরিকশার দাম ৪-৫ লাখ টাকা। কিন্তু একটি অটোরিকশার নিবন্ধন নম্বর হাতবদল হচ্ছে ২০-২৫ লাখ টাকায়।

সভায় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ আল লতিফ বলেন, ঢাকার বাসগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় অনেক উন্নতি দেখা যাবে। গত মঙ্গলবার মালিক সমিতির নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই কমিটি শৃঙ্খলা ফেরাতে সবকিছুই করবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আবদুর রহিম বক্স বলেন, দেশে মোটরযান চালকদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। পাঠ্যবইয়ে সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কিত সতর্কতার বিষয় যুক্ত করতে হবে। বিদেশের সড়কে একটা বিড়ালও ঢুকতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে মহাসড়কে যত্রতত্র ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা ঢুকে দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে।

এসব নৈরাজ্য সম্পর্কে বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন বলেন, ‘অটোরিকশার অনেক সংগঠন। এগুলো নিয়ে আমরা খানিকটা বিপাকে পড়েছি। এক পক্ষকে ডাকলে আরেক পক্ষ অভিযোগ তোলে– তাদের কেন ডাকলেন না। ফলে সিএনজিচালিত অটোরিকশা মিটারে চলা, ভাড়া এবং মালিকের জমার বিষয়টি ঠিক করা যাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, অটোরিকশা রাইড শেয়ারিংয়েও চলছে। ফলে কিছুটা প্রতিযোগিতা এসেছে। তবে এই খাতে নৈরাজ্য বন্ধে আরও কঠোর কিছু করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। দুয়েক মাসের মধ্যে সিএনজির মিটারে নির্ধারিত ভাড়ায় চলাচল, নির্ধারিত মালিকের জমা মেনে চলার বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজধানী ঢাকায় বাসের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, রাজধানীর বাসগুলোকে দেখলে বোঝা যায়, এগুলোর কী অবস্থা। এ জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী মে মাস থেকে সড়কে ২০ বছরের পুরোনো বাস-ট্রাক চলতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে অভিযান শুরুর পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। বাসের চালক ও সহকারীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

চালকের লাইসেন্স সংকট নিয়ে একাধিক অংশীজনের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখন প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪ হাজার লাইসেন্স মুদ্রণ হচ্ছে। অতীতে জমে থাকার কারণে এখনও লাইসেন্স পেতে সমস্যা হচ্ছে। এটি শিগগির কেটে যাবে। এ ছাড়া ৫০ হাজারের মতো লাইসেন্স তারা মুদ্রিত করে ডাক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছেন। বিষয়গুলো আরও দ্রুত করা এবং অনলাইন সেবার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালানোর বিষয়ে আশ্বাস দেন তিনি।

সভার শুরুতে পাওয়ার পয়েন্টে মাধ্যমে বিআরটিএ থেকে দেওয়া ১৬ ধরনের সেবার বিষয় তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বিআরটিএতে এখন লাইসেন্স গ্রহণ, নবায়ন, ফিটনেস সনদ প্রদান, মালিকানা বদলিসহ প্রায় সব কাজই বাসায় বসে অনলাইনে করা যাচ্ছে। বিআরটিএ কার্যালয়ে একবার এলেই হয়। আগে প্রতিটি কাজের জন্য ৮-১০ বার আসতে হতো।বিআরটিএর ঢাকা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সভপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএর পরিচালক (প্রকৌশল) সীতাংশু শেখর বিশ্বাস ও পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) নাজনীন হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাস্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ